শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭, ০৪:৪৯:১৯

`আচ্ছা মিথিলা এ নিয়ে তুমি আমার কয়বার বউ হলে?’

`আচ্ছা মিথিলা এ নিয়ে তুমি আমার কয়বার বউ হলে?’

বিনোদন ডেস্ক: জন কবির-মিথিলা—দুই বন্ধুই আছেন গানে-অভিনয়ে। তাঁদের বন্ধুত্বের গল্প জানাচ্ছেন মীর রাকিব হাসান

জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায় না। মিথিলা বলেন, ‘আরে ওতো গুহায় থাকে। ’ জন হেসে বললেন, ‘না না, আমার বাসায় একটু নেটওয়ার্কের প্রবলেম হয়। যার কারণে অনেক সময় খুঁজে পাওয়া যায় না। ’

দুজনের কাছে প্রথম প্রশ্ন ছিল, আপনাদের বন্ধুত্বের শুরুটা কবে থেকে? মিথিলা চট করে বলে উঠলেন, ‘জন কবে আমার বন্ধু হলো! ও তো আমার শত্রু। ’

তাহলে সেই শত্রুতা শুরুর গল্পই শোনা যাক। ‘কোনো একসময় জন যখন মিউজিশিয়ান ছিল…[হাসি দিয়ে শুধরে নিলেন] যখন শুধুই মিউজিশিয়ান ছিল, সেটা ২০০৪-০৫-এর সময়কার কথা, তখন থেকেই চেনা। ওকে চেনা মূলত তাহসানের জন্য। ওরা একই ব্যান্ডে ছিল। ওর বন্ধু, সেখান থেকে আমার বন্ধু। কিন্তু সম্পর্কটা শুধু তাহসানের বন্ধুতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। জন আমারও ভালো বন্ধু। এখন তো কলিগও বলা যায়। আমরা যখন একসঙ্গে নাটকে অভিনয় শুরু করি তখন কমন ফ্রেন্ড থেকে ফ্রেন্ড হয়ে যাই। এই বন্ধুত্বের বয়স প্রায় তিন বছর। জুটি হয়ে বেশ কিছু নাটক করেছি, জনপ্রিয়ও হয়েছে সেগুলো। ’

জন বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করার আগে ও ছিল তাহসানের গার্লফ্রেন্ড, তারপর স্ত্রী। ওইভাবে আমরা কমন ফ্রেন্ডস হই। আমাদের আরো অনেক কমন ফ্রেন্ডস আছে। কাজ করতে গিয়ে আমাদের বন্ধুত্ব বা শেয়ারিংটা বেশি হয়েছে। ’

দুজনের বন্ধুত্বের অবস্থা খুব বেশি ভালো বলা যায় না। সারাক্ষণ মিথিলার অত্যাচার সইতে হয় জনকে। এটা-ওটা নিয়ে খোঁচা দিতেই থাকে। সেই খোঁচাখুঁচির মাঝেও তো অভিনয়ের সময় রোমান্টিক সংলাপ দিতে হয়, তখন তারা কী করেন? ‘অনেক হাসাহাসি করি। অনেক শট এনজি হয়। শেষ দৃশ্যে যখন জড়িয়ে ধরার দৃশ্য করতে হয় সেটা হয় আরো মজার। এক টেকে কখনোই দৃশ্যটা হয় না। দুজনের হাসাহাসি শুরু হয়ে যায়’—বললেন মিথিলা।

জন হেসে বলেন, ‘হাসাহাসির জন্য খুব বেশি কিছু করতে হয় না। শুধু বলি, আচ্ছা মিথিলা এ নিয়ে তুমি আমার কয়বার বউ হলে? তারপরই শুরু হয় হাসির রোল। ’

জনের কাছে মিথিলার প্রশ্ন, ‘আচ্ছা, বলো তো তুমি আমার কাছে কতবার স্যরি বলেছ? আর কতবার আমার হাত-পা ধরেছ?’

জন হেসে বলেন, ‘নাটকে আমার চরিত্রগুলোই কেমন যেন অন্য রকম, বারবার ভুল করি। কতবার যে স্যরি বলতে হয়, হাত-পা ধরতে হয়, তার হিসাব নেই। ’

মিথিলা বললেন, ‘ওর অনেক পুরনো গল্প জানি। সেগুলো নিয়েই বেশি মজা হয়। ওই সব বলেই তো ওকে খেপাই। ’

কেমন সে গল্পগুলো? ‘ও অনেক কান্নাকাটি করত। অনেক ইমোশনাল ছিল। এখন তো একটু বড় হয়েছে, ইমোশন কমেছে। আর এর অন্যতম কারণ হলো ভালোবাসা, ওর জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট (হাসি)। সে কারণেই অনেক কাঁদত। ’

কখনো সেই কান্নার দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়েছে মিথিলার? ‘আমার সামনে কখনো কাঁদেনি। আমি গল্প শুনতাম। ওই যে আমাদের কমন ফ্রেন্ড আছে, তার কাছ থেকে। ’

মিথিলার কথার প্রতিবাদ জানালেন জন, ‘ আমি একটু-আধটু ইমোশনাল, কথা মিথ্যা নয়। কিন্তু এতটা কান্নাকাটি করতাম না। এটা যে বলেছে সে আমার নামে মিথ্যা বলেছে। সে আমাকে পচাইছে। তবে এটা ঠিক, স্ক্রিনে এখন অনেক কান্নাকাটি করতে হয়। ’

ক্যামেরার সামনে কিভাবে কাঁদেন? কোনো টেকনিক আছে নিশ্চয়ই? ‘দুইটা টেকনিক। যখন সিরিয়াসলি কাঁদতে হয় তখন জীবনের ক্রাইসিসগুলো মনে করি। আর যখন ফানি ওয়েতে কান্না করি তখন ওর [মিথিলা] কথা মনে করি। ওকে দেখলেই হাসি পায়। ’

মিথিলা বলেন, “আমরা একটা নাটক করেছি ‘ক্রাই বেবি ক্রাই’, যেখানে ও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হিসাব করে তিন দিন কেঁদেছে। পরে নাকি চোখের ডাক্তারও দেখাতে হয়েছে। ও বলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। ”

‘তবে আমার কান্নাটা বেশ কাজে দিয়েছে। অনেকের প্রশংসা পেয়েছি নাটকটি করে’—বললেন জন।

মিথিলা এবার প্রশংসা করলেন জনের, ‘আমি তো অভিনয়ে ওর সিনিয়র। সেখান থেকে বলতে পারি, জন অভিনয়টা ভালো করে। গল্পের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। ’ সঙ্গে আরেকটু যোগ করলেন, ‘এই যে প্রশংসা করে দিলাম, জনের মার্কেট ভালো করে দিলাম। ’

জন হেসে বললেন, ‘ওর কথায় বিশ্বাস করার কিছু নেই। কারণ আমি জানিই না ও কোনটা ফানি আর কোনটা সিরিয়াস হয়ে বলে। ’

এবার একটু কাজের কথায় আসি। মিথিলা সেই একই রকম, উৎসব-পার্বণে অভিনয় করেন। সংসার, সন্তান আর চাকরি নিয়ে ব্যস্ততা। আর জনের ব্যস্ততা কী নিয়ে? ‘রোজার সময় তো অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। বেশ কয়েকটা নাটক করলাম এবার। আসলে নিজেকে কখনোই অভিনেতা মনে হয় না। অনুরোধে ঢেঁকি গিলে যা অভিনয় করা। আর গানের ব্যাপারে বলব, সারা বছর গান বানাই। তারপর সেগুলো নিজেই শুনি। ভাবি এগুলো কে শুনবে? তারপর সেগুলো নিজের কাছেই রেখে দিই’—বললেন জন।

গানগুলো কি বিশেষ কাউকে উদ্দেশ্য করে বানানো হয় নাকি? উত্তর দিলেন মিথিলা। জনের হাঁড়ির খবর ফাঁস করে দিলেন, ‘হ্যাঁ, গার্লফ্রেন্ড আছে তো কিউট একটা। খুব ভালো। আমার চেয়ে বয়সে ছোট কিন্তু লম্বায় বড়। বেশ সুন্দরও। মেয়েটার অনেক ধৈর্যশক্তি। এই জন্যই বেশি ভালো লাগে। জনকে আড়াই বছর ধরে সহ্য করছে—এটা চাট্টিখানি কথা নাকি!’

জনের কোন জিনিসটা মিথিলার কাছে ভালো লাগে না? উত্তরে মিথিলা বলেন, ‘জন কথা বলার সময় কিছু কথা বারবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আনে। এটা ভালো লাগে না। ’

জনের কাছে মিথিলার খারাপ দিক হলো, ‘ও সেটে সব সময় দেরি করে আসে। ’

প্রত্যুত্তর দিলেন মিথিলা, ‘একটা মানুষ টি-শার্ট, হাফপ্যান্ট আর নিজের বডিটা নিয়ে আসে শুটিংয়ে। আর আমার কত কিছু গুছিয়ে আসতে হয়…সেটে যাওয়ার আগেই ও আমাকে ফোন দিয়ে বলে, মিথিলা তুমি কয়টার সময় যাবা সত্যি করে বলো তো। ’

সঙ্গে সঙ্গে জন বলেন, ‘আর ও প্রতিবারই সেই সত্যি টাইমের কম হলেও এক ঘণ্টা পর আসে।’
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে